Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বাজেট ২০১৮-২০১৯

নতুন কোনো করারোপ ছাড়াই বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) দেশি-বিদেশি দাতা সংস্থার অনুদাননির্ভর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।

২৮ আগস্ট সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল নগর ভবনের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ৪০৬ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২৮ টাকার এই প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন।

এদিকে গত অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় এবারের বাজেটে টাকার পরিমাণ ৩৭ কোটি ৬৪ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৩৭ টাকা কম। গত বছর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল ৪ শত ৪৪ কোটি ১০ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৬৫ টাকা।

অপরদিকে সোমবার ঘোষিত বিসিসি’র ১৫তম বাজেট বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান পরিষদের চতুর্থ এবং শেষ বাজেট। তা ছাড়া সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামালের সিটি ও পৌরসভা মিলিয়ে ১৬তম বাজেট ঘোষণা বলে জানিয়েছেন তিনি।

নতুন বাজেটে বিভিন্ন উৎস্য থেকে বিসিসি’র প্রারম্ভিক স্থিতি ৬ কোটি ২৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকাসহ মোট আয় ধরা হয়েছে ১৭১ কোটি ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ২৮ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অনুদান ১১ কোটি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং মূলধন ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ১৫ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৬০ টাকা। এ ছাড়া কর খাতে ২৩ কোটি ২০ লক্ষ ৫৮ হাজার ২৫ টাকা, রেটস ২৯ কোটি ৯২ লক্ষ ২২ হাজার ৯৩ টাকা, ফিস তিন কোটি ৯৬ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা, রেন্ট এ্যান্ড প্রফিটস সম্পত্তি থেকে আয় ২৩ কোটি ৩০ লক্ষ ৯৮ হাজার ১৫০ টাকা এবং বিবিধি আয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা টাকা।

অপরদিকে বাজেটে যেসব খাতে ব্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে বেতন ও ভাতাদি খাতে ৩৩ কোটি ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার ৩০ টাকা, রাস্তা ঘাট সংরক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৫০ কোটি ২২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, শিক্ষা ও কৃষ্টি ২৫ লক্ষ টাকা, আনুসঙ্গিক খরচ ৭ কোটি ৩৫ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, বিবিধ ৩৪ কোটি ৬৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭৬০ টাকা, মূলধন ১৫ লক্ষ টাকা, জমা ও অগ্রীম খাতে ৩১ কোটি ১৮ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৮৮ টাকা এবং সমাপনী স্থিতি ৫ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ মোট রাজস্ব খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭১ কোটি ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ২৮ টাকা।

বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, তিনিসহ বর্তমান সিটি পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নগরীতে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন। এর মধ্যে গত অর্থবছরে নগরবাসীর নিরাপদ যাতায়াত ও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বীর শ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক (সদর রোড), শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সড়ক (বিএম কলেজ রোড), গোড়া চাঁদ দাস রোড, নিউ সদর ঘাট রোড, পলাশপুর প্রধান সড়ক, শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক (পুলিশ লাইন্স রোড), গোরস্থান রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, বান্দ রোড, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদ সড়ক (আলেকান্দা সড়ক), খান সড়ক, নিউ হাউজ লেন, কবি জীবনানন্দ দাস সড়ক (বগুরা রোড), এমএ জলিল সড়ক (নবগ্রাম রোড), অমৃত লাল দে সড়ক (হাসপাতাল রোড), বিসিক রোড, বাজার রোড, রিফিউজি কলোনী সড়ক, ক্লাব রোডসহ এলকায় বিভিন্ন রাস্তা ও পার্শ্ব ড্রেন নির্মাণ-পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে নগরীর ৬৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বিটুমিনাস কার্পেটিং, ২৯ দশমিক ৫০ কিলোমিটার আরসিসি রাস্তা, ১০ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সিসি রাস্তা, ১৬ কিলোমিটার পাকা ড্রেন ও ৫টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ কাজ সম্পাদিত হয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ২ দশমিক ২০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। যার কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে।

এডিপি’র আওতায় সেবক কলোনি নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে নগরীর আমিরকুটির ও কাউনিয়া সেবক কলোনিতে তিনটি ৬তলাবিশিষ্ট সেবক কলোনি নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। যার মাধ্যমে ১৪৪টি পরিবার বাসস্থানের সংস্থান করা যাবে। এখানে একটি করে প্রাইমারি স্কুল, মন্দির নির্মানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হবে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের যানবাহনজনিত সমস্যা নিরাসনকল্পে কাশিপুর ৭ একর ৯ শতাংশ জমির উপরে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পে প্রায় ৪১ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণের ২৬ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক বাতির ব্যবস্থা করার জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪০০টি পোল ও ১২টি এনার্জি সেট স্থাপন করা হয়েছে। নগরীর ২ কিলোমিটার সৌরবিদ্যুৎ চালিত সড়ক বাতি এবং ৩০ কিলোমিটার এলইডি লাইট স্থাপন করা হবে। যার চুক্তি মূল্য যথাক্রমে ১৮ লক্ষ ও ৯০ লক্ষ টাকা। এ কাজ চলতি অর্থবছরেই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।

তিনি বলেন, নগরীর জনসংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পানি সরবরাহে সেবার মান বৃদ্ধিকল্পে সবার জন্য বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে বর্ধিত এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে গত অর্থবছরে ৩৬ কিলোমিটারসহ মোট ২৮৯ কিলোমিটার পানি সরবরাহের পাইপলাইন, ৫টি নতুন উৎপাদক নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩টি নলকূপ চলতি অর্থবছরে চালু করা হবে। পাশাপাশি সুপেয় পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরও ৪৩৫টি গভির নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া ২টি সার্ফেজ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ সমাপ্তির পথে। যার উৎপাদন ক্ষমতা প্রতিদিন ৩ কোটি ২০ লক্ষ লিটার। বর্তমানে উৎপাদনসহ যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ লিটার।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন মেয়র আহসান হাবিব কামাল।

বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহেদুজ্জামান, বিসিসি’র প্যানেল মেয়র আলহাজ্ব কেএম শহীদুল্লাহ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও বর্তমান কাউন্সিলর আলহাজ্ব আলতাফ মাহমুদ সিকদার, মহিলা প্যানেল মেয়র শরিফ তাসলিমা কালাম পলি, কাউন্সিলর আকতারুজ্জামান হিরু, হাবিবুর রহমান টিপু, মজিবর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইমতিয়াজ মাহমুদ জুয়েল, বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমান খানসহ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, বিসিসি কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক্স ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।